ভুলতা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়

ভুলতা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আমাদের এলাকাটি ছিল জমিদার অধ্যুষিত এবং তাদের হুকুম ছাড়া এলাকার মানুষ অনেক কিছুই করতে পারে নাই, তখন ব্রিটিশ আমল। জনসাধারণের জন্য আইনও ছিল বৈষম্যমূলক এবং পাকিস্তানি প্রশাসনও ছিল অনেকটা সেই রকম। আইনের বিধি নিষেধের খড়গ হস্ত সবসময় থাকিতো বাঙালিদের বিরুদ্ধে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ লেখাপড়া করে বা বাঙালি জনগণ শিক্ষিত হোক, তাহা পাকিস্তান সরকার ভালো চোখেদেখে নাই। সবারই মনের চাহিদা ছিল,যদি একটি হাইস্কুল হইতো। ঠিক সেই সময় ১৯৬৪ ইং সালে ক্ষণজন্মা পুরুষ,অসীম সাহসী ও শিক্ষানুরাগী মর্তুজাবাদ গ্রাম নিবাসী জনাব মোঃ সানাউল্লাহ্ ভূঁইয়া(ওরফে সোনা মিয়অ ভুঁইয়া সাহেব ভুলতা বাজারের সমবয়সী কয়েকজন ব্যবসায়ী বন্ধু-বান্ধব নিয়া পরামর্শ করিয়া ভুলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম অস্থায়ী জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

সানা উল্লাহ্ ভুঁইয়া ও ভুলতা বাজার কমিটির সদস্যদেরকে নিয়া বিভিন্ন হাটে বাজারে যেমন মাধবদী, শেখেরচর, নরসিংদী, মুড়াপাড়া কয়েক সপ্তাহ ধরে চাঁদা সংগ্রহ করিয়া মোটামুটি ১৭০০ (এক হাজার সাতশত) টাকার মত উঠাইয়া ছিলেন। ঐ সময়ে প্রাদেশীক মন্ত্রী শ্রী ভবানী শংকর বিশ্বাস ভুলতাতে আসেন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে কিছু সাহায্য সহযোগিতা বিতরণ করিয়া যান। তখন সানা উল্লাহ ভুঁইয়া সাহেব সবাইকে নিয়া মিটিং কওে উক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং নতুন করে সাইনবোর্ডে লাগানো হয় “কিতাব উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমী ভ‚লতা” নামে। উনার কাছে প্রথম দশ হাজার টাকা পাওয়ার পর উত্তর ও দক্ষিণ দিকের ঘরের কাজ আরম্ভ করা হয় এবং ঘরের কাজ করার সময় যখন টাকা শেষ হয়ে যায় তখন থেকে টাকার জন্য উনার কাছে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। কিন্তু উনি আর কোন অবস্থাতেই টাকা দিতেছেন না বিধায় স্কুলে এক জরুরি সাধারণ সভার আয়োজন করা হয় এবং সভার সেই সভায় স্কুল কমিটির সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাব ডিবিশনাল অফিসার সাহেব এবং স্কুল কমিটির সেক্রেটারী মাছুমাবাদ মিঠাব নিবাসী জনাব ফসিউজ্জামান সিকদার সাহেব। এই মিটিং এ রহম আলী কন্ট্রাক্টর সাহেব স্কুল কমিটির সভাপতি সাহেবের হাতে পাঁচ হাজার টাকার একটি চেক দিয়ে যান। বলেন আর কোন টাকা দিব না, যার ফলে কিতাব উদ্দিন মেমোরিয়াল এর নাম পরিবর্তন করে “ভুলতা উচ্চ বিদ্যালয়” এই নামে সাইনবোর্ড লাগানো হয় যা আজও বর্তমান।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংসদ সদস্য, জনাব গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) মাননীয় মন্ত্রী,পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এমপি হওয়ার পর ২০০৯ সালে বর্তমান অধ্যক্ষ সহকারী প্রধান হিসেবে এবং পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ২য় তলা ভবন ২ টা, ৪র্থ তলা ২ টা, ৩য় তলা ১ টা ভবন নির্মাণ করা হয়। এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পরীক্ষার স্থায়ী কেন্দ্র, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, কলেজে উন্নীত করন ও এমপিও ভুক্ত হওয়া, গেট, বাউন্ডারী, কালভার্ট নির্মাণসহ একাডেমীক ফলাফল ও ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়। উন্নত জাতি গঠনে স্বাধীনতার স্বপক্ষে এবং বর্তমান সরকারের ভিশন মিশন বাস্তবায়নে বর্তমান অধ্যক্ষ মহোদয় মান সম্মত প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষে নিরলস ভাবে কাজ করছেন। বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি, জনাব গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা সাহেব দীর্ঘদিন যাবৎ  গভর্নিং বডির সদস্যদের সাথে কাজ করে লেখা পড়ার মান উন্নয়নে ও নৈতিক শিক্ষা দানে আপ্রান চেষ্টা করছেন।